মঙ্গলবার, ০১ অক্টোবর ২০২৪, ১০:২৪ পূর্বাহ্ন
গাজীপুর থেকে সাইফুল আলম সুমনঃ— গাজীপুর জেলার শ্রীপুর উপজেলার মাটিকাটা নদীর উপর নির্মিত দীর্ঘ ১শ পঞ্চাশ ফুট সেতুটির বিভিন্ন অংশ খসে পড়েছে। ঝুঁকিপূর্ণ বিবেচনায় কয়েকমাস ধরে জনগুরুত্বপূর্ণ এই সেতুর উপর দিয়ে যান চলাচল বন্ধ হয়ে আছে। এতে কয়েকটি গ্রামের কয়েকহাজার মানুষের দুর্ভোগ তৈরী হলেও তা দেখার যেন কেউ নেই।
স্থানীয়রা জানান, উপজেলার কাওরাইদ ইউনিয়নের বলদীঘাট ও ধামলই গ্রামকে বিচ্ছিন্ন করে রেখেছে মাটিকাটা নদী। জনদুর্ভোগের কথা বিবেচনা করে ১৯৯১সালে এই নদীর উপর বলদীঘাট বাজারের সাথেই একটি সেতু নির্মাণ করে বদলীঘাট ও ধামলই গ্রামকে সংযুক্ত করা হয়। এরপর থেকে এই সেতু ধরে চলাচল করতো এই দুই গ্রামের মানুষ ছাড়াও পাশের ভালুকা উপজেলার উড়াহাটি, স্বজনগাঁও ও পারুলদিয়া গ্রামের লোকজন। সম্প্রতি এই সেতুর বিভিন্ন অংশই জরাজীর্ণ, খসে পড়েছে কিছু অংশও। এদিকে গত রোববার রাতে সেতুর মাঝে বেশকিছু জায়গা ধসে গিয়ে বর্তমানে যান চলাচল বন্ধ রয়েছে। এতে দুর্ভোগে পড়েছে কয়েক হাজার গ্রামবাসী। এদিকে উৎপাদিত কৃষি পণ্য পরিবহন ও জরুরী প্রয়োজনে যোগাযোগের জন্য প্রায় দশ-বারো কিলোমিটার ঘুরে উপজেলা সদরের সাথে যোগাযোগ রক্ষা করতে হচ্ছে স্থানীয়দের।
আরও পড়ুনঃ শ্রীপুরে বোমা ফাটিয়ে ও গুলি করে স্বর্নের দোকান লুট! গুলিবিদ্ধ ১
কাওরাইদ ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক সদস্য আলম খান বলেন, প্রথম থেকেই এই সেতুটি অপরিকল্পিত ভাবে করা হয়েছে। ১শ ৫০ ফুট দীর্ঘ এই সেতুর প্রস্থ ছিল মাত্র ৮ ফুট। একদিক দিয়ে গাড়ী আসলে অপরদিক দিকে দাঁড়িয়ে থাকতে হতো। এছাড়াও নির্মাণ কাজও ছিল নিম্নমানের। সেতুটি নির্মাণের সময় আমরা প্রতিবাদ করেছিলাম, কিন্তু কোন কাজ হয়নি। সম্প্রতি সেতুটির কিছু অংশ খসে পড়ায় আমাদের আশংকা সত্যি হলো।
বর্তমান সদস্য শফিক হায়দার জানান, এই সেতুকে ঘিরে দুই গ্রাম ও আশপাশের কয়েকটি উপজেলার মানুষের অর্থনৈতিক কর্মকান্ড পরিচালিত হয়। হঠাৎ করে এই সেতুতে ঝুঁকি তৈরী হওয়ায় বিপাকে পড়েছে স্থানীয় লোকজন। গত কয়েক মাস ধরে ছোট ধরণের যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যাওয়ায় দুর্ভোগের মাত্র আরো বেড়েছে। স্থানীয় লোকজনকে বিকল্প পথে প্রায় দশ-বারো কিলোমিটার ঘুরে পথ চলতে হচ্ছে।
আরও পড়ুনঃ শ্রীপুরে মদ্যপানে দু’জনের মৃত্যু / অসুস্থ আরও ২জন
বলদীঘাট জেএম উচ্চবিদ্যালয়ে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক আব্দুল কুদ্দুস হায়দার জানান, এই সেতুতে ঝুঁকির কারণে যান চলাচল বন্ধ হয়ে পড়ায় সাধারণ মানুষের সাথে দুর্ভোগ বেড়েছে বিদ্যালয়গামী শিক্ষার্থীদের। নদীর এপাড় থেকে ওপাড় পণ্য পরিবহনেও খরচ বেশী করতে হচ্ছে বিভিন্ন লোকজনকে। জনদুর্ভোগ লাগবে দ্রæত এই সেতুটির সংস্কার করা উচিত।
কৃষক শামসুল হক জানান, ধামলই গ্রাম জুড়েই আধিক্য রয়েছে পোল্ট্রি শিল্পের। বাড়ীতে বাড়ীতে রয়েছে খামার। এই খামারের মালামাল পরিবহন ও কৃষকদের উৎপাদিত বিভিন্ন পণ্য বিক্রি করতে কয়েক কিলোমিটার ঘুরে যাতায়াত করতে হয়। সেতুটির সংস্কার করলে দুর্ভোগ কমে আসবে।
কাওরাইদ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এডভোকেট আব্দুল আজিজ জানান, কৃষি প্রধান এই এলাকার গ্রামীণ অর্থনৈতিক পরিচালনা অব্যাহত রাখতে এই সেতুটির গুরুত্ব অনেক। বর্তমানে এই সেতুর কিছু অংশ খসে পড়ায় ঝুঁকি তৈরী হয়েছে। যানচলাচল বন্ধ থাকায় গ্রামীণ অর্থনীতিরও ক্ষতি হচ্ছে। প্রাথমিক অবস্থায় সেতুটি সংস্কারের জন্য উপজেলা প্রকৌশলীকে অবহিত করা হয়েছে।
স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের শ্রীপুর উপজেলা সহকারী প্রকৌশলী সৈয়দ আব্দুস সবুর জানান, জনদুর্ভোগ লাঘবে সেতুটি সংস্কারের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে, শীঘ্রই সেতুটির সংস্কার কাজ শুরু হবে।
আমরা জনতার সাথে......“আজকের দিগন্ত ডট কম”
© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত “আজকের দিগন্ত ডট কম”। অনলাইন নিউজ পোর্টালটি বাংলাদেশ তথ্য মন্ত্রনালয়ে জাতীয় নিবন্ধন প্রক্রিয়াধীন।
Leave a Reply