শনিবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৩, ০৭:৫৩ অপরাহ্ন
গাজীপুর থেকে সাইফুল আলম সুমনঃ— ঢাকা-ময়মনসিংহ ট্রেন রুটে চলাচলকারী আন্তঃনগর যমুনা এক্সপ্রেস ট্রেনের গাজীপুরের শ্রীপুর রেলস্টেশনে শুক্রবার থেকে আনুষ্ঠানিক যাত্রা বিরতি শুরু হয়েছে। বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষের প্রায় চার বছরের বিরতিহীন অন্দোলন-সংগ্রামের ফসল হিসেবে দেখছেন স্থানীয়রা।
আরও পড়ুনঃ রাঙ্গুনিয়ার শান্তিরহাট ব্যবসায়ী সমিতির নির্বাচনে সহ সভাপতি পদপ্রার্থী ইব্রাহীম হোসাইন
শ্রীপুর মুক্তিযোদ্ধা রহমত আলী সরকারি কলেজের সহকারী অধ্যাপক আবুল কালাম আজাদ জানান, শ্রীপুর বাজারের কিছুসংখ্যক ব্যবসায়ীদের নিয়ে আন্ত:নগর যমুনা এক্সপ্রেস ট্রেনটি শ্রীপুর স্টেচশনে যাত্রাবিরতির দাবীতে রেলপথে একাধিকবার মানববন্ধন কর্মসুচী পালন করেন। বিভিন্ন গণমাধ্যমে যাত্রাবিরতির গুরুত্ব নিয়ে সংবাদ প্রকাশ হয়। কিন্তু কর্র্তপক্ষের টনক নড়েনি।
শ্রীপুর বাজারের ব্যবসায়ী ও যমুনা এক্সপ্রেস ট্রেনের যাত্রা বিরতি আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী তপন কুমার বণিক বলেন, গত প্রায় চার বছর আগে স্থানীয় বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষ, দলমত নির্বিশেষে ও ট্রেন যাত্রীদের নিয়ে দু’বেলা লাল কাপড় দেখিয়ে রেলপথ অবরোধ করেন। চার বছর ধরেই এটি ছিল তাদের রুটিনমাফিক কাজ। রেলস্টেশন কর্মী, নিরাপত্তাবাহিনী ও রেল পুলিশের হুমকি উপেক্ষা করে জনস্বার্থে তারা নিয়মিত এ কাজটি করেন। এছাড়াও তৎকালীন সংসদ সদস্য, বর্তমান সদস্য ও রেলপথমন্ত্রীর সুপারিশ নিয়ে রেল বিভাগের উধৃতন কর্মকর্তাদের কাছে একক দাবী নিয়ে আবেদন জমা দেন।
আন্দোলনে অংশ নেয়া অপর বয়োজৈষ্ঠ সিদ্দিক বলেন, চার পাঁচজন করে বিভিন্ন দলে বিভক্ত হয়ে রেলপথ বিভাগের বিভিন্ন দপ্তরে দাবী আদায়ে নিয়মিত যোগাযোগও ছিল রুটিনভুক্ত কাজের অংশ।
শ্রীপুর পৌরসভার মেয়র আনিছুর রহমান বলেন, আন্দোলনকারীরা বিভিন্ন সময় যমুনা এক্সপ্রেস ট্রেনের যাত্রা বিরতির গুরত্ব উল্লেখ করে বহুবার বহু আবেদনে আমাকেসহ জনপ্রতিনিধিদের স্বাক্ষর ও সুপারিশ নিয়ে রেল কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করেছেন। শ্রীপুর থেকে সড়কপথে স্বভাবিক সময়ে ঢাকা যেতে সময় লাগে সের্বাচ্চ দুই ঘন্টা। কিন্তু চলমান যানজট, বিরতিহীন যানবাহন না থাকায় শ্রীপুরবাসীকে ঢাকা পর্যন্ত ৬৮ ৭৫ কিলোমিটার পথ অতিক্রম করতে সময় লাগে কমপক্ষে চার ঘন্টা। কিন্তু যমুনা এক্সপ্রেসে কমলাপুর রেলস্টেশনে পৌছতে সময় লাগে দেড় ঘন্টা।
আরও পড়ুনঃ বঙ্গমাতা সাংস্কৃতিক জোটের স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উৎযাপন
শ্রীপুর বাজারের ব্যবসায়ী আব্দুর রশীদ বলেন, যাত্রা বিরতির অনুমোদন ও টিকিটের অনুমোদন না থাকায় শ্রীপুরবাসীকে গত গত চার বছর বিনা টিকিটে জয়দেবপুর পর্যন্ত ভ্রমণ করতে হয়েছে। পরে জয়দেবপুর থেকে টিকিট কিনে ঢাকা পর্যন্ত যেতে হয়েছে। অবশেষে শুক্রবার চার বছর দুর্ভোগ ও আন্দোলন-সংগ্রামের সমাপ্তি ঘটেছে।
শ্রীপুর ট্যুরিস্ট যুব উন্নয়ন সমিতির সভাতি জুবায়ের বলেন, এ আন্দোলনে যারাই অংশগ্রহণ করেছে তারাই নিজের পকেট থেকে টাকা, কায়িক শ্রম ও সময় ব্যয় করেছে। সবই হয়েছে জনস্বার্থে। এরকম একটি সফলতা আবারও প্রমাণ করে দিলে জনস্বার্থ ও নি:স্বার্থ কাজে মানুষ কখনো বিমুখ হয় না। চার বছর পরে হলেও আন্তনগর যমুনা এক্সপ্রেসের দাপ্তরিক অনুমোদন পেল।
আরও পড়ুনঃ বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষে রাঙ্গাবালীতে আ.লীগের আলোচনা সভা
শ্রীপুর রেলওয়ে স্টেশনের স্টেশন মাস্টার হারুন অর রশীদ বলেন, শুক্রবারই প্রথম আন্তনগর যমুনা এক্সপ্রেসের যাত্রারিবতির অনুমোদন পেয়েছে। ভোর ৬টায় ঢাকার উদ্দেশে ট্রেনটি স্টেশন ত্যাগ করবে আবার ঢাকা থেকে ছেড়ে সন্ধ্যা ৬টায় স্টেশেন এসে পৌঁছবে। এ স্টেশন থেকে জয়দেবপুর পর্যন্ত ৪৫ টাকা এবং ঢাকা পর্যন্ত ৬০ টাকা ভাড়া নির্ধারণ করেছে কর্তৃপক্ষ। টিকিটের অনুমোদন হয়েছে তবে নির্ধারিত সিট বরাদ্দ হয়নি। এ কাজটি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
আমরা জনতার সাথে......“আজকের দিগন্ত ডট কম”
© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত “আজকের দিগন্ত ডট কম”। অনলাইন নিউজ পোর্টালটি বাংলাদেশ তথ্য মন্ত্রনালয়ে জাতীয় নিবন্ধন প্রক্রিয়াধীন।
Leave a Reply