মঙ্গলবার, ০৫ ডিসেম্বর ২০২৩, ০৪:৫৮ পূর্বাহ্ন
আজকের দিগন্ত অনলাইন ডেস্কঃ— পাঁচ বছরের বলিউডের জনপ্রিয়তায় ইতি টানলেন “জায়রা ওয়াসিম”। এত কম বয়সে তাঁর অভিনয় দক্ষতা অত্যন্ত প্রশংসিত হয়। ফিল্মফেয়ার অ্যাওয়ার্ড, ন্যাশনাল ফিল্ম অ্যাওয়ার্ড-ন্যাশনাল চাইল্ড অ্যাওয়ার্ড ফর একসেপশনাল অ্যাচিভমেন্ট পেয়েছেন জায়রা।
শুরু থেকেই জায়রার কেরিয়ার গ্রাফ ক্রমশ উঁচুতে উঠছিল। এমন সময়ে কেরিয়ারে ইতি টানার যে সিদ্ধান্ত জায়রা নিয়েছেন, তাতে হতবাক গোটা সিনেমা মহল।
২০১৬ সালে আমির খানের সঙ্গে ‘দঙ্গল’ ছবিতে অভিনয় শুরু করেন জায়রা ওয়াসিম এবং পরে প্রিয়ঙ্কা চোপড়ার সঙ্গে ‘দ্য স্কাই ইন পিঙ্ক’ সিনেমায় অভিনয় করেন ।
সম্প্রতি জায়রা ওয়াসিম তাঁর ইনস্টাগ্রাম যা লিখেছেন, তা নিজের টুইটার, ফেসবুক অ্যাকাউন্টেও শেয়ার করেছেন। পাঁচ বছর আগে তিনি যে সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন, তা চিরকালের জন্য তাঁর জীবন বদলে ফেলেছে। যে মুহূর্তে তিনি বলিউডে পা রেখেছিলেন, তাঁর জন্য বিশাল জনপ্রিয়তার দরজা খুলে গিয়েছে। তিনি সাধারণ মানুষের আলোচনার মূল বিষয়বস্তু হয়ে উঠছিলেন, সাফল্যের প্রতীক হিসাবে তাঁকে তুলে ধরা হয়েছিল এবং প্রায়ই তাঁকে তরুণদের রোল মডেল হিসেবে চিহ্নিত করা হত। কিন্তু, তিনি যা করতে চেয়েছিলেন বা হতে চেয়েছিলেন, তার কোনওটাই এগুলো নয়, তাঁর কাছে সাফল্য এবং ব্যর্থতার যা ধারণা, তিনি নতুন করে তা বুঝতে শুরু করেছেন।
জায়রা লিখেছেন,‘আমি বুঝতে পেরেছি আমি বহু দিন ধরেই অন্য একজন হয়ে ওঠার চেষ্টা করে চলাচ্ছিলাম। আমি বুঝতে পেরেছি, যদিও আমি এখানে সুন্দর ভাবে ফিট হতে পারব কিন্তু আমি এটার জন্য নয়। এই ফিল্ড আমাকে অনেক ভালবাসা, সমর্থন, প্রশংসা দিয়েছে, কিন্তু এই ফিল্ড আর যেটা করেছে তা হল আমাকে ক্রমশ অবমাননার দিকে ঠেলে দিয়েছে, ক্রমশ অসচেতন ভাবে আমি আমার ইমান (বিশ্বাস)-এর থেকে বেরিয়ে এসেছি। কারণ আমি এমন একটা পরিবেশে কাজ করতাম যা ক্রমাগত আমার ইমান মাঝে এসে দাঁড়াত, ধর্মের সঙ্গে আমার সম্পর্ক বিপন্ন হয়ে পড়েছিল।’
জায়রা তাঁর পোস্টে লিখেছেন, ক্রমাগত সেই বাধার সঙ্গে মানসিক ভাবে লড়তে শুরু করেন তিনি। বারবার নিজেকে বোঝানোর চেষ্টা করেন, এমন একটা ফিল্ডে তাঁর কাজের সিদ্ধান্ত একেবারে সঠিক এবং সেটা কখনও তাঁর জীবনকে প্রভাবিত করবে না।
কিন্তু ‘নিজের উপর থেকে সমস্ত বারাখা (আশীর্বাদ)’ হারিয়ে ফেলেছেন বলে জানান জায়রা।
এরপর জায়রা ওয়াসিম লেখেন,‘কোরানের বিশাল এবং ঐশ্বরিক জ্ঞানের মধ্যে আমি তৃপ্তি এবং শান্তি খুঁজে পেয়েছি। প্রকৃতপক্ষে হৃদয় তার সৃষ্টিকর্তার জ্ঞান, তাঁর গুণাবলী, তাঁর করুণা এবং তাঁর আদেশের জ্ঞান অর্জনে শান্তি পায়।’
নিজের ব্যক্তিগত বিশ্বাসের বদলে আল্লাহ-র উপরেই যে ভীষণ ভাবে বিশ্বাস করতে শুরু করেছেন জায়রা, তার উল্লেখও রয়েছে পোস্টে।
এতদিন নিজের বিবেকের সঙ্গে প্রতারণা করে কী ভাবে সৃষ্টিকর্তা দ্বারা সৃষ্টির প্রকৃত উদ্দেশ্য ভুলে নিজের জীবন কাটাচ্ছিলেন তিনি, সেটারও উল্লেখ্য রেখেছেন ওই পোস্টে।
শেষে সকলের প্রতি জায়রার উপদেশ, ‘সাফল্য, খ্যাতি, সম্পদ যে পর্যায়ে পৌঁছে যাক না কেন, তাতে যেন কখনও শান্তি এবং নিজের বিশ্বাস না হারিয়ে যায়।’
বহুদিন থেকে যে কারণেই হোক জায়রা যে শান্তিতে ছিলেন না তা ২০১৮ সালে নিজেকে ভীষণ অবসাদগ্রস্ত জানিয়ে পোস্ট করেছিলেন জায়রা।
সেই পোস্টে তিনি জানিয়েছিলেন, গত চার বছর ধরে দিনে পাঁচ বার করে অ্যান্টিডিপ্রেস্যান্ট খেতে হয় তাঁকে। সপ্তাহের পর সপ্তাহ ঘুম হয় না। এমনকি মানসিক অবসাদ এমন পর্যায়ে পৌঁছেছিল যে, কখনও কখনও তাঁর আত্মহত্যার চিন্তাও মাথায় এসেছিল বলে জানিয়েছিলেন জায়রা।
––: সূত্রঃ আনন্দবাজার :—
আমরা জনতার সাথে......“আজকের দিগন্ত ডট কম”
© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত “আজকের দিগন্ত ডট কম”। অনলাইন নিউজ পোর্টালটি বাংলাদেশ তথ্য মন্ত্রনালয়ে জাতীয় নিবন্ধন প্রক্রিয়াধীন।
Leave a Reply